মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক ২১ কোটি ছাড়াল

মিডিয়া এক্সপ্রেস ডেস্ক
প্রকাশিত : বুধবার, ২০২৩ অক্টোবর ১৮, ১২:০১ অপরাহ্ন

বাড়তি কোনো টাকা ছাড়াই ঘরে বসে খোলা যায় হিসাব। শহর কিংবা গ্রামে নিমেষেই পাঠানো যায় টাকা। কেনাকাটা, বিল পরিশোধ, ঋণ গ্রহণসহ যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন নানা পরিষেবা। বিদেশ থেকে আসছে রেমিট্যান্স। হাতের মুঠোতে মিলছে সেবা। ফলে বিকাশ, রকেট, নগদের মতো এমএফএসের ওপর মানুষের আগ্রহের পাশাপাশি বাড়ছে নির্ভরশীলতা। বাড়ছে গ্রাহক সংখ্যাও।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের আগস্ট শেষে গ্রাহক ২১ কোটি ছাড়িয়েছে। নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা এখন ২১ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার ৪৭৬ জন।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রতি মাসেই বাড়ছে গ্রাহক সংখ্যা। চলতি বছর এপ্রিলে মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহক ২০ কোটির ঘর অতিক্রম করে। এপ্রিলে গ্রাহক ছিল ২০ কোটি ০৬ লাখ ৮৯ হাজার ২১০ জন। এরপর মে মাসে গ্রাহক বেড়ে হয় ২০ কোটি ৩৯ লাখ ৭০ হাজার ১৮৬ জন। জুনে ২০ কোটি ৭২ লাখ ৬৮ হাজার ৬৪৬ জন এবং জুলাইতে গ্রাহক ছিল ২০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৯ হাজার ৮৩৪ জন।

গ্রাহকের পাশাপাশি লেনদেনও বেড়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিকাশ, রকেট, নগদের মতো মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় চলতি বছরের আগস্ট মাসে ১ লাখ ৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। যা আগের মাসের তুলনায় ১১ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা বেশি। জুলাই মাসে ৯৮ হাজার ৩০৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। যা তার আগের মাস জুনের চেয়ে ৩৩ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা। জুনে কোরবানির ঈদের মাসে লেনদেন হয়েছিল ১ লাখ ৩২ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা। এই অঙ্ক এ যাবতকালের সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে একক মাসে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল চলতি বছরের এপ্রিলে প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা। আর আগস্টে দৈনিক লেনদেন হয়েছে ৩৫৩ কোটি টাকা।

বর্তমানে বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশ, মাই ক্যাশ, শিওর ক্যাশসহ বিভিন্ন নামে ১৩টির মতো ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিচ্ছে। ডাক বিভাগের সেবা ‘নগদ’ একই ধরনের সেবা দিচ্ছে।

এখন গ্রাহক ঘরে বসেই ডিজিটাল কেওয়াইসি (গ্রাহকসম্পর্কিত তথ্য) ফরম পূরণ করে সহজে ঝামেলা ছাড়াই এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে হিসাব খোলার সুযোগ পাচ্ছেন। আগস্টে নিবন্ধিত এসব হিসাবের মধ্যে পুরুষ গ্রাহক ১২ কোটি ২৭ লাখ ৮৯ হাজার ১৪১ ও নারী ৮ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ৫৯৮ জন। এ সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ১৮ হাজার ৯৮৮।

নিয়ম অনুযায়ী, টানা তিন মাস একবারও লেনদেন করেনি এমন হিসাবকে নিষ্ক্রিয় বলে গণ্য করে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো। সেই হিসাবে আগস্ট শেষে সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ১৯ লাখ ৬৩ হাজার।

মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন আর শুধু টাকা পাঠানোতেই সীমাবদ্ধ নেই। বরং এর মাধ্যমে দৈনন্দিন কেনাকাটা, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিসহ বিভিন্ন বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জসহ নানা ধরনের সেবা মিলছে। রাজধানী ও জেলা শহরে গাড়িচালক ও গৃহপরিচারিকাদের বেতনও এখন দেওয়া হচ্ছে বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো সেবা মাধ্যম ব্যবহার করে। শ্রমজীবীরাও এখন এমএফএস সেবার মাধ্যমে গ্রামে টাকা পাঠাচ্ছেন।

আগস্টে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ক্যাশ ইন হয়েছে ৩৫ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা, আর ক্যাশ আউট হয়েছে ৩০ হাজার ৪৭ কোটি টাকা। এ সময় ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে ৩০ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। রেমিট্যান্স এসেছে ৫১৫ কোটি টাকা।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ হয় ২ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন পরিষেবার ৩২৫০ কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয় এবং কেনাকাটায় ৪ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ‘রকেট’ মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে।


প্রকাশক কর্তৃক ৫৫/১ পুরানা পল্টন(৮ম তলা), ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং ১৬২/১ আরামবাগ গ্যালাক্সি প্রিন্টার্স থেকে মুদ্রিত।

Mobile : +88 01316 39 51 50 (News), +88 01816 19 58 12 (Ads)
E-mail : info.mediaexpressbd@gmail.com, info@mediaexpressbd.com

কপিরাইট © 2011-2023 Weekly Media Express
Design & Developed by Smart Framework