রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) রাতে অভিযান চালিয়ের বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। যারা বিভিন্ন মামলায় আগে থেকে জড়িত তাদের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিনে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভাঙচুর, অগ্নিসন্ত্রাস, অস্ত্র ও খুনের মামলায় আগে থেকে যারা জড়িত, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের গ্রেপ্তার করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নতুন করে গ্রেপ্তারের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।’
নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী, স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সংবিধানের সব নিয়ম মেনে যে নির্বাচন চলছে সে নির্বাচনে কেউ যদি অংশ না নেয় সেটার জন্য সে নির্বাচন বন্ধ হবে না। বহুদল আছে যারা নির্বাচনে অংশ নিবে। দুই একটি দল অংশ না নিলে সে নির্বাচন কেন গ্রহণযোগ্য হবে না? নির্বাচনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক অধিকার। কেউ যদি নিজের অধিকার প্রয়োগ না করে সেটা তাদের ব্যাপার।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘৭৫-এ খন্দকার মোশতাক ও মেজর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে যে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করেছিলেন, ৩ নভেম্বর জেল হত্যা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা-এ সমুদয় হত্যাকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য বঙ্গবন্ধু পরিবারকে ও আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা। যে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বাংলাদেশে শুরু হয়েছিল সে ঘৃণ্য রাজনীতি থেকে তাদের উত্তরসূরিরা এখনো সরে দাঁড়ায়নি। সে ধারাবাহিকতা এখনো বহন করে চলছে জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি।’
এই হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বাংলাদেশের মাটি থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্মূল করার প্রত্যয় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যত দিন না শেখ রাসেলের মতো অবুঝ শিশুর জন্য এই দেশ নিরাপদ ও বাসযোগ্য করে না তুলতে পারব তত দিন পর্যন্ত আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।’
এর আগে সকালে শেখ রাসেলের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা। পরে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আজ শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিন। ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ড থেকে সেদিন রেহাই পাননি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ১০ বছর বয়সী শেখ রাসেলও।
শিশু রাসেলের জীবন সম্পর্কে শিশু-কিশোরদের কাছে তুলে ধরতে তার জন্মদিনকে ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে তৃতীয়বারের মতো পালন করতে যাওয়া এবারের শেখ রাসেল দিবসের প্রতিপাদ্য—‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’।
দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। আজ সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দিবসের আনুষ্ঠানিকতার উদ্বোধন করবেন এবং শেখ রাসেল পদক ও স্মার্ট বাংলাদেশ পুরস্কার দেবেন।
শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও কর্মসূচি নিয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের উদ্যোগে দেশ ও দেশের বাইরে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে দিবসটি একযোগে পালিত হবে। গতকাল মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) আইসিটি টাওয়ারে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এ ছাড়া দেশের বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দিবসটি উপলক্ষে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, র্যালিসহ নানা আয়োজন করা হয়েছে।
 
				

 
									 
									



 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							
মন্তব্য করুন