দলে ছিলেন না অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও সহ-অধিনায়ক লিটন দাস। নেই অভিজ্ঞ তামিম ইকবালও। সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপে ভরাডুবির কারণে সিলেটে ম্যাচ শুরুর আগেই বাংলাদেশের হার দেখছিলেন অনেকেই। তবে দলগত পারফরম্যান্সে শক্তিশালী নিউজিল্যান্ডকে ১৫০ রানের বড় ব্যবধানে হারালো বাংলাদেশ।
অধিনায়কত্বের অভিষেকেই বাজিমাত করলেন নাজমুল হাসান শান্ত। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই পয়েন্ট পেল টাইগাররা।
সিলেটে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার প্রথম টেস্টে শনিবার (২ ডিসেম্বর) নিউজিল্যান্ডকে ১৫০ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশে। ৩৩২ রান তাড়ায় নেমে পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনেই কিউইদের দ্বিতীয় ইনিংস থেমেছে ১৮১ রানে। টাইগারদের পক্ষে স্পিনার তাইজুল ইসলাম ৭৫ রানে ৬ উইকেট শিকার করেছেন।
অবশ্য আজকের এই জয়ের দৃশ্যপটটা হঠাৎ আসেনি। চতুর্থ দিন শেষেই বাংলাদেশ জয়ের খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। যদিও মিচেল এবং সোধির দৃঢ়তায় পঞ্চম দিন পর্যন্ত খেলা গড়ায়। টেস্টের দুই ইনিংসেই কিউইদের কঠিন পরীক্ষায় নিয়েছেন অধিনায়ক সাকিবের পরিবর্তে দলের স্পিন অ্যাটাকের নিয়ন্ত্রণ দেওয়া তাইজুল ইসলাম। স্পিনারদের সহায়ক হয়ে ওঠা পিচে চতুর্থ দিন শেষে তার ঘূর্ণিতে ১১৩ রানেই ৭ উইকেট হারায় সফরকারীরা।
আজকে প্রথম টেস্টের শেষ দিনে নেমে শুরুতেই নিজের ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নেন আগেরদিন ৪৪ রানে অপরাজিত থাকা ড্যারিল মিচেল। অবশ্য এরপর তিনি আর চোখ রাঙাতে পারেননি সেভাবে।
মিচেলের বিদায়ের পর বাংলাদেশের জয়ের অপেক্ষা বাড়িয়েছেন কিউই অধিনায়ক টিম সাউদি। তবে লক্ষ্য তখনও অনেক দূরে। কিউই অধিনায়ককে আউট করেই তাইজুল টেস্ট ক্রিকেটে ১২তম বারের মতো পাঁচ উইকেট শিকার করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেছেন মিচেল। বাংলাদেশের হয়ে তাইজুলের ৬টি ছাড়াও নাঈম হাসান ২টি, মেহেদি মিরাজ ও শরীফুল একটি করে উইকেট পান।
আজকের আগে অবশ্য নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাস হতাশার। এক জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের পরাজয় ১৩ টেস্টে। ৩টি টেস্ট ড্র হয়েছিল। সিলেটের এই টেস্টে জিততে হলে ইতিহাসই গড়তে হতো কিউইদের। নিজেদের ইতিহাসে তাদের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড পাকিস্তানের বিপক্ষে, ক্রাইস্টচার্চে। ৩২৪ রান তাড়া করে তারা ১৯৯৪ সালে জিতেছিল। এই ম্যাচে তাদের সামনে বাংলাদেশের দেওয়া লক্ষ্য ছিল ৩৩২ রানের।
এর আগে মাহমুদুল হাসান জয়ের ৮৬ রানের ইনিংসের কল্যাণে প্রথম ইনিংসে ৩১০ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। আর দ্বিতীয় ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্তর সেঞ্চুরি আর মুশফিকুর রহিম ও মেহেদীর ফিফটিতে ৩৩৮ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। তাতে প্রথম ইনিংসে কেন উইলিয়ামসনের সেঞ্চুরিতে ৩১৭ রান তোলার কিউইদের সামনে লক্ষ্যটা গিয়ে দাঁড়ায় ৩৩২ রান।
সিলেট পর্বে সফল হওয়া মানেই কিন্তু শান্ত-মুমিনুলদের দায়িত্ব শেষ তা নয়। ঢাকার মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি মাঠে গড়াবে ৬ ডিসেম্বর। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম টেস্ট ম্যাচে জয়ের দেখা পাওয়া শান্তর সামনে এখন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দলকে প্রথমবার টেস্ট সিরিজ জিতিয়ে ইতিহাস গড়ার হাতছানি।
মন্তব্য করুন