জন্মাষ্টমী উৎসবের ব্যয় সীমিত করে দেশের বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ৫ লাখ টাকার ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ-বাংলাদেশ, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা।
শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ১১টায় নগরের রহমতগঞ্জে পরিষদের প্রধান কার্যালয়ে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারা।
এসময় সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনসহ ১০ দফা দাবি জানানো হয় কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে।
লিখিত বক্তব্যে কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন বলেন, শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ-কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজনে ২৬ আগস্ট থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত চারদিন সনাতন ধর্মের প্রাণপুরুষ যুগাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি জন্মাষ্টমী উৎসব সারাদেশব্যাপী ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে উদযাপিত হবে।
এ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় পরিষদের পক্ষ থেকে ঐতিহাসিক জেএম সেন হলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।
উৎসবের ব্যয় সীমিত করে বন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, বিভিন্ন জেলায় বস্ত্র বিতরণ, রক্তদান, অনাথ ও দুস্থদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী প্রদান, গীতাপাঠ, সন্ধ্যারতি, জন্মাষ্টমী পূজা ও ভোগ, দেশ ও জাতির কল্যাণে সমবেত প্রার্থনা করা হবে। সোমবার (২৬ আগস্ট) সকাল ১০টায় বের করা হবে ঐতিহাসিক মহাশোভাযাত্রা। ধর্মমহাসম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রীয় নেতৃবৃন্দ।
প্রবীর কুমার সেন বলেন, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও তাদের বাড়ি-ঘর, মঠ-মন্দির, উপসানয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। মন্দিরে অগ্নিসংযোগে করা হয়েছে। এসব ঘটনায় সনাতন সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন। পরিষদের পক্ষে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে অসম্মান ও জোড় করে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে- যেটি জাতির বিবেককে নাড়া দিচ্ছে। পরিষদ এসব অপরাধের নিন্দা এবং জড়িতদের আইনের আওতায় এতে শাস্তির দাবি জানাচ্ছে। সম্প্রতি বন্যার কারণে সারাদেশে যাদের ঘর-বাড়ি নষ্ট, আশ্রয়হীন হয়েছে, তাদের পুনর্বাসনে আর্থিক সহায়তার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
অন্য দাবিগুলো হলো-বৈষম্যমূলক সকল আইন ও অধিকার বিলুপ্ত করা, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন, শারদীয় দুর্গোৎসবে ৩ দিনের ছুটি, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশন আইনের বাস্তবায়ন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন ও দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন, গণঅভ্যুত্থানে সনাতনী সম্প্রদায়ের নিহত সনাতনী ভাইবোনদের আর্থিক অনুদান ও আহতদের সরকারি খরচে চিকিৎসা সেবা প্রদান, সনাতনীদের বাড়িঘর, দোকানপাট ও মঠ-মন্দিরে হামলা, লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ, দোষীদের বিচারের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করা এবং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সকল সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও হত্যার বিচার করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তপন কান্তি দাশ, অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার ও বিমল কান্তি দে, অধ্যাপক স্বদেশ চক্রবর্তী, লীলারাজ গৌরদাস ব্রহ্মচারী, চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারী, গদাধর দাস ব্রহ্মচারী, মুকন্দ ভক্তিদাস ব্রহ্মচারী, রাস বিহারী কৃষ্ণ চন্দ্র দাশ, লায়ন দুলাল চন্দ্র দে, চন্দন দাশ, কৃষ্ণ কান্তি দত্ত, লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য্য, লায়ন তপন কান্তি দাশ, প্রকৌশলী আশুতোষ দাশ, ডা. বিধান মিত্র, লায়ন শংকর সেনগুপ্ত, বাবুল ঘোষ বাবুন, শিবু প্রসাদ দত্ত, অ্যাডভোকেট সলিল কান্তি গুহ, প্রকৌশলী সুভাষ গুহ, দিপাল অনিন্দ্য পাল, আর.কে দাশ রুপু, উজ্জ্বল বরণ বিশ্বাস, এস প্রকাশ পাল, বাপ্পী দে, অ্যাডভোকেট শিপন কুমার দে, অর্জুন কুমার নাথ, সজল দত্ত, বাবলু দেবনাথ, সঞ্জীব বণিক প্রমুখ।