দুবাই থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে নামতেই ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে আটক চট্টগ্রামের প্রতারক ব্যবসায়ী ইসমাইল, এই খবর মুহূর্তেই পৌঁছে যায় বন্দর নগরীর সদরঘাট থানায় অত:পর পুলিশের দুই উপপরিদর্শক বিমানে যোগে দ্রুত চলে যান ঢাকায়। বিমানবন্দরের ভেতর থেকে হাতবদল হয় আসামির, রাত পৌনে আটটায় এয়ার অ্যাস্ট্রার ফ্লাইটে এক আসামি নিয়ে দুই এসআই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান রাত পৌনে নয়টায়। সেখান থেকে সরাসরি সদরঘাট থানা।
চট্টগ্রামের ফিশারি ঘাটের একাধিক মাছ ব্যবসায়ীদের প্রায় তিন কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে থাকা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনকে (৩৯) রাজধানীর হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (২১ জুন) দুপুরে তাকে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন শাখা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদরঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) অর্ণব বড়ুয়া।তিনি বলেন, ‘এন এন ফিশ প্রতিষ্ঠানের মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন (৩৯) বিভিন্ন মাছ ব্যবসায়য়ীদের কাছ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা নিয়ে দুবাই পালিয়ে যান। গত ২ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ হাবিব নামে এক মাছ ব্যবসায়ি তিন কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ তুলে তিনজনের বিরুদ্ধে সদরঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের জন্য ইমিগ্রেশনে আবেদন করেছিলাম।’
এ প্রসঙ্গে সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস জাহান জানান, ‘মাছ ব্যবসায়ী হাবিবের দায়ের করা মামলায় গত ৯ মে ভোরে কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা এলাকা থেকে ইসমাইলের কর্মচারী আল আমিন প্রকাশ নোমান (৩৯) ও ম্যানেজার কাউছার আহাম্মদ সাগরকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়। প্রধান আসামি ইসমাইল এতোদিন পলাতক ছিলেন। আজ তাকে ঢাকা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইসমাইল কয়েক দফায় হাবিবের কাছ থেকে ৮০ লাখ টাকার সামুদ্রিক মাছ কেনেন। এর মধ্যে দুই দফায় ৩০ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। বাকি ৫০ লাখ টাকা গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পরিশোধ করার কথা ছিল। ওই দিন হাবিবের ম্যানেজার সাদ্দামকে টাকার জন্য পাঠালে ইসমাইলের প্রতিষ্ঠান এন এন ফিশের অফিস তালাবদ্ধ দেখতে পান। মুঠোফোনও বন্ধ করে দেন ইসমাইল। এরপর থেকে তার আর খোঁজ মেলেনি।
প্রসঙ্গত, সদরঘাট এলাকায় এন এন ফিশ প্রতিষ্ঠানের মালিক তথা "আসামি ইসমাইল" মৎস্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাছ কিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করতেন। নোমান ও সাগর কমিশনে তার ব্যবসার দেখাশোনা করতেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিভিন্ন মাছ ব্যবসায়িদের কাছ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকার মাছ কেনেন ইসমাইল। এরপর তিনি সটকে পড়েন অন্যত্র পরে ব্যবসায়ীরা নোমান ও সাগরের কাছে পাওনা টাকা চাইতে গেলে তারাও টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। ওই মাসেই ইসমাইলকে প্রধান আসামি করে সদরঘাট থানায় মামলা করা হয়।