লিওনেল মেসির কাঁধে চড়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের উদযাপন করেছে আর্জেন্টিনা। সেই মেসি জাদুতেই ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে টানা চার ম্যাচে জয়ের দেখা পেল লে আলবিসেলেস্তেরা। লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আজ নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে পেরুর বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতেছে আর্জেন্টিনা। ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি'অরজয়ী আর্জেন্টাইন মহাতারকা মেসি।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) ভোরে পেরুর ঘরের মাঠ এস্তাদিও ন্যাসিওনাল ডি লিমায় শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। ম্যাচে তাদের বলের দখল ছিল ৬৫ শতাংশ, এ থেকেই আর্জেন্টিনার দাপট আন্দাজ করা যায়। অন্যসব ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতার ভিড়ে ম্যাচের প্রথমার্ধেই দুই গোল করেন ইন্টার মায়ামি তারকা মেসি। এতে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান মজবুত করেছে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা।
আরও পড়ুন: নেইমারের চোটের দিনে উরুগুয়ের কাছে লজ্জার হার ব্রাজিলের
আগের ম্যাচে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে কষ্টসাধ্য জয়ের দিনে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হয়ে শুরুর একাদশে ছিলেন না মেসি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে বদলি ফুটবলার হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। তবে আজ পেরুর বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকেই একাদশে ছিলেন এই ফরোয়ার্ড। কিন্তু ঘরের মাঠের দাপটটাই শুরুতে দেখিয়েছিল পেরুর ফুটবলারা। কিন্তু ম্যাচের লাগাম হাতে নিতে বেশিক্ষণ সময় নেয়নি মেসিবাহিনী।
ম্যাচের ৩২ মিনিটেই মেসির কল্যাণে প্রথম গোলের দেখা পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। নিকোলাস গঞ্জালেসের বাড়ানো বলে বক্সের ডান দিক থেকে বাম পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন আর্জেন্টাইন তারকা। এর মিনিট দশেক পরই দ্বিতীয় গোলও পেয়ে যান তিনি।
৪২তম মিনিটে এনজো ফার্নান্দেসের পাস পেয়েও সেটি এড়িয়ে মেসির জন্য ছেড়ে দেন ম্যানচেস্টার সিটির তারকা ফরোয়ার্ড জুলিয়ান আলভারেজ। এরপর নিখুঁত শটে বল জালে পাঠান মেসি। এতে ২-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা। এসময় তাদের দখলে ছিল ৭৫ শতাংশ বল।
দ্বিতীয়ার্ধে নেমেও আক্রমণের ধারা ধরে রাখে আর্জেন্টাইনরা। ফলে ৫০ মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ানোর সুযোগ আসে নিকোলাস গঞ্জালেসের সামনে। কিন্তু শেষ সময়ের মরিয়া স্লাইডে ব্যবধান বাড়তে দেননি উইল্দার কার্তাহেনা।
গতিময় ফুটবলে পরের কিছুক্ষণ আর্জেন্টিনার রক্ষণকে চাপে রাখে পেরু। নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে ফের মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নেয় আর্জেন্টিনা। ৫৭তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে বল জালে বলও পাঠানে মেসি। তবে ভিএআর মনিটরে রিপ্লে দেখে অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি।
এরপর অল্প সময়ের ব্যবধানে আবারও সুযোগ আসে মেসির সামনে। তবে ছোট ডি-বক্স থেকে ডিফেন্ডারদের চ্যালেঞ্জের মুখে শট নিতে পারেননি। পরের মিনিটে তার শট বেরিয়ে যায় পোস্ট ঘেঁষে। ৮৪তম মিনিটে ব্যবধান কমানোর কাছাকাছি ছিল পেরুও। খুব কাছ থেকে নেওয়া হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি রেনাতো তাপিয়া। ফলে বাছাইয়ের চতুর্থ ম্যাচেও নিজেদের প্রথম গোল পাওয়া হয়নি পেরুর।
টানা চতুর্থ জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও দৃঢ় করেছে আর্জেন্টিনা। ২২ বছর পর ব্রাজিলকে হারানো উরুগুয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে উঠে এসেছে দুই নম্বরে। সমান পয়েন্ট নিয়ে তিনে নেমে গেছে ব্রাজিল।
এদিন দেশের হয়ে আর্জেন্টাইন মহাতারকার শেষ গোলটি ছিল ১০৬তম। আন্তর্জাতিক ফুটবলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোল করা ইরানের আলি দাইয়ির (১০৮) সঙ্গে মেসি ব্যবধান আরও কমালেন। ১২৭ গোল করে এখনও অনেকটা দূরে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডধারী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।