শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় একটি বিখ্যাত ক্যাসিনোয় দেখা যায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড-পিসিবির জেনারেল ম্যানেজার আদনান আলী ও মিডিয়া পরিচালক উমর ফারুক কালসনকে। পাকিস্তানের এক গণমাধ্যম গত সোমবার এই খবর প্রকাশ করে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও জানিয়েছে, কয়েক দিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পিসিবির দুই কর্মকর্তার ক্যাসিনোতে যাওয়ার ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়। আইসিসির আচরণবিধি অনুযায়ী, টুর্নামেন্টে চলাকালীন অংশ নেওয়া দলগুলোর খেলোয়াড় ও অফিশিয়ালদের জুয়াসংশ্লিষ্ট স্থানে যাওয়া নিষিদ্ধ।
আর তাই এশিয়া কাপের মাঝে পিসিবির এই দুই কর্মকর্তা গভীর সমস্যায় পড়তে পারেন বলে জানিয়েছে ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড-পিসিবি।
নোটিশের জবাবে দুই কর্মকর্তা আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, শেষ রাতের দিকে আশপাশে সব খাবারের রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আর তারা রাতেও অভুক্ত ছিলেন। এই কারণে বাধ্য হয়েই হালাল খাবারের খোঁজে তারা ক্যাসিনোয় গিয়েছিলেন।
তবে ক্যাসিনোয় গিয়ে নিষিদ্ধ কোনো কর্মকাণ্ডে জড়ানোর ইচ্ছা তাদের ছিল না বলে জানিয়েছেন ওই দুই কর্মকর্তা। পিসিবি এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো শাস্তি না দিলেও জিও জানিয়েছে, দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বোর্ড।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের ক্রিকেট লেখক ওমাইর আলভী পিসিবির দুই কর্মকর্তার ব্যাখ্যায় অবশ্য সন্তুষ্ট হতে পারেননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক সমর্থকের মতো তারও মন্তব্য, ‘তারা ক্যাসিনোয় রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন, এই ব্যাখ্যা হজম করা কষ্টকর। অনেকেই বিশ্বাস করবেন না।’
পিসিবির এ দুই কর্মকর্তা বেশির ভাগ সময়ই খেলোয়াড়দের সঙ্গে থাকেন। ক্যাসিনোয় যাওয়ার খবর জেনে দ্রুতই তাদের কাছে এর কারণ জানতে চান পিসিবির প্রধান নির্বাহী সালমান নাসের। পিসিবির প্রধান জাকা আশরাফ এখন পরিবার নিয়ে শ্রীলঙ্কাতেই অবস্থান করছেন। তিনিই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
টুর্নামেন্ট চলাকালীন পাকিস্তানের দলসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ক্যাসিনোয় যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। ২০১৫ বিশ্বকাপে স্ত্রীকে সঙ্গে ক্যাসিনোয় গিয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচক ও উইকেটকিপার মঈন খান। তিনিও বলেছিলেন, ক্যাসিনোয় রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পিসিবি তাকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠিয়েছিল।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে কলম্বোয় ক্যাসিনোসংশ্লিষ্টতার জন্য এর আগেও বিতর্কের মুখে পড়েছেন ক্রিকেটাররা। ১৯৯৪ সালে এই একই ক্যাসিনোয় বাজিকরদের কাছে ম্যাচের তথ্য সরবরাহের অভিযোগ উঠেছিল অস্ট্রেলিয়ার দুই কিংবদন্তি শেন ওয়ার্ন ও মার্ক ওয়াহর বিরুদ্ধে। পাকিস্তানের ক্রিকেটারদেরও অতীতে এই ক্যাসিনোয় দেখা গেছে।