ছাত্রজনতার আন্দোলন ঘিরে বন্ধ হওয়া মেট্রোরেল ৩৭ দিন পর রোববার (২৫ আগস্ট) থেকে চলবে। সেই অনুযায়ী ট্রায়াল রান করে প্রস্তুতি নিচ্ছে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী কোম্পানি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল)।
শনিবার (২৪ আগস্ট) ডিএমটিসিএলের জনসংযোগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নাজমুল বলেন, রোববার থেকে মেট্রোরেল চালানোর সিদ্ধান্ত আছে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি চলছে। ট্রেন চালিয়ে ট্রায়াল করা হচ্ছে। মেট্রোরেল পরিচালনাকারী দলের সঙ্গে ডিএমটিসিএলের বৈঠক চলছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আজ বিকেলে জানিয়ে দেয়া হবে।
অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক (ইলেকট্রিক্যাল, সিগন্যাল অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন অ্যান্ড ট্র্যাক) মো. জাকারিয়া বলেন, সকাল থেকে এ পর্যন্ত ১০টি ট্রেন চালিয়েছি আমরা। এটা স্বাভাবিক সময়ে যেভাবে ট্রেন চলেছে, সেভাবেই চালানো হয়েছে। শুধু আজকেই না, আমরা বৃহস্পতি ও শুক্রবারও পরীক্ষামূলকভাবে চালিয়েছি মেট্রোরেল। এতে লাইনে কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। কিছু কারিগরি ইস্যু নিয়ে কাজ করা হয়েছে। তবে কোনো যাত্রী পরিবহন করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, রোববার থেকে আগের সময়সূচি অনুযায়ী মেট্রোরেল চলাচল করবে। তবে রোববার থেকে মেট্রোরেল চালু হলেও মেরামত ও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা থাকায় আপাতত কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
ছাত্রাজনতার আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ করা হলে ওই দিন বিকেল ৫টায় মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর পরদিন মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা হয়।
নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ১১ আগস্ট উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ১৭ আগস্ট থেকে মেট্রোরেল চালু হবে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল স্বাভাবিক নিয়মে চলাচল করবে। তবে মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে আপাতত ট্রেন থামবে না। কারণ, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় এ দুটি স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অবশ্য এরপর ১৫ আগস্ট ডিএমটিসিএল সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১৭ আগস্ট থেকে মেট্রোরেল চালু সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান। এতে বলা হয়, অনিবার্য কারণে প্রয়োজনীয় কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনো শুরু করা সম্ভব হয়নি।
ডিএমটিসিএলের সূত্রে সম্প্রতি জানা গেছে, লাইন, কোচ ও সংকেতব্যবস্থা—মেট্রোরেলের সবই ঠিক আছে। এরপরও মেট্রোরেল চালু না হওয়ার কারণ ছিল নিচের দিকের কর্মীদের কর্মবিরতি। বড় কর্মকর্তারা বাড়তি সুবিধা নিচ্ছেন, এমন অভিযোগ এনে কর্মবিরতিতে যান মেট্রোরেলের কর্মচারীরা। এ জন্যই কারিগরি কোনো সমস্যা না থাকার পরও মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনার পর তাদের দাবি পূরণের বিষয়ে আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
১৮ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান সাত দিনের মধ্যে মেট্রোরেল চলাচল শুরুর আশ্বাস দেন। মেট্রোরেলের কর্মচারীরা ২০ আগস্ট থেকে কাজে যোগ দিয়েছেন। সেই হিসেবে মেট্রোরেল রোববার থেকে চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।