বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) আফ্রিকার কিছু অংশে এমপক্স এর প্রদুর্ভাবকে বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এই সংক্রামক রোগটি পূর্বে মাঙ্কিপক্স নামে পরিচিত ছিল।
আফ্রিকার সিডিসি বলেছে, ২০২৪ সালের শুরু থেকে জুলাই এর শেষ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৫০০-এর বেশি এমপক্সে সংক্রমণ এবং ৪৫০ জনেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে। দ্রæত এই রোগ আশেপাশের দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে। এটি ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় সংক্রমণের ১৬০ শতাংশ বেশি ও মৃত্যুর ক্ষেত্রে ১৯ শতাংশ বেশি।
এ অঞ্চলে প্রতিবছর হাজার মানুষ আক্রান্ত হন, মারা যান কয়েক শ। তবে বিশেষ করে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয়। সম্প্রতি সুইডেন ও পাকিস্তানে এই রোগে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।
এমপক্স কি এবং এর লক্ষণ কি কি?
এমপক্স এবং স্মলপক্স বা গুটিবসন্ত একি ধরণের ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ঠি হয়। এটি মূলত প্রানী থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতো। কিন্তু বর্তমানে এটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে।
প্রাথমিক লক্ষণের মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, ঘর্মাক্ত হওয়া, পিঠে ব্যথা, পেশিতে ব্যথা এবং দূর্বল বোধ করা। জ্বর সেরে গেলে ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। এটি সাধারণত প্রথমে মুখে শুরু হয়ে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে হাতের তালু ও পায়ের তলায় বেশি ছড়ায়।
এই ফুসকুড়িতে ভীষণ চুলকানি বা ব্যথা অনুভুত হতে পারে। এটি বিভিন্ন স্তর দিয়ে যায়। অবশেষে একটি ক্ষত তৈরি করে। এবং এর দাগ থেকে যেতে পারে। সাধারণত এ সংক্রমণ নিজে থেকে ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে সেরে যায়। এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি গুরুতর হতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে। গুরুতর ক্ষেত্রে ক্ষত গুলো পুরো শরীলকে আক্রমণ করতে পারে। বিশেষত চোখ, মুখ ও যৌনাঙ্গে।
এমপক্স কিভাবে ছড়ায়?
এমপক্সে সংক্রমিত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস অন্যজনের শরীরে সংক্রমিত হয়ে থাকে। এই ভাইরাসটি ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক,চোখ, নাক বা মুখ দিয়ে শরীওে প্রবেশ করতে পারে। যৌন মিলন বা আক্রান্ত ব্যাক্তির সংস্পর্শ। এমনকি অসুস্থ ব্যাক্তির কাছাকাছি কথা বলা বা শ্বাস নেয়ার মাধ্যমে এই রোগ সংক্রমিত হতে পারে।
এই ভাইরাসে আক্রান্ত কোন ব্যাক্তির স্পর্শ করেছে এমন বস্তু যেমন বিছানাপত্র, জামাকাপড় ও তোয়ালে স্পর্শ করলেও এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এই ভাইরাস বহন করছে এমন প্রাণী যেমন বানর, ইঁদুর ও কাঠবিড়ালি সংস্পর্শে আসলেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
বেশি ঝুঁকিতে কারা
এই রোগে উপসর্গযুক্ত ব্যাক্তি, স্বাস্থ্যকর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যসহ তাদের ঘনিষ্ঠ কারো সংস্পর্শে আশা যে কেউ সংক্রমিত হতে পারেন এ ভাইরাসে। কারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে তা এখনো গবেষণা চলছে তবে শিশুরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
এমপক্সের টিকা আছে?
এমপক্সের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করার সেরা উপায় টিকা গ্রহণ। এর টিকা রয়েছে। কিন্তু সাধারণত তাঁরাই শুধু এটি নিতে পারেন, যাঁরা সংক্রমণের ঝুঁকিতে বা রোগীর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে রয়েছেন তারা।
মন্তব্য করুন