চেহারায় বুড়িয়ে যাওয়া আটকাতে কত চেষ্টাই না করে মানুষ। কেউ কেউ অস্ত্রোপচার পর্যন্ত করান।
তবু একটা সময় এসব ব্যর্থ হয়। ত্বকে ফুটে ওঠে বলিরেখা বা বয়সের ভাঁজ। এ নিয়ে যারা চিন্তিত, তারা বুড়িয়ে যাওয়া আটকাতে মেনে চলুন এসব অভ্যাস।
কোলাজেন হলো এক ধরনের প্রোটিন। এটি ত্বককে বলিরেখা মুক্ত এবং সুস্থ রাখে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে কোলাজেন উৎপাদন কমতে থাকে। সেই কারণে খাবারের মাধ্যমে এই ঘাটতি পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে মাংসের ঝোল খুব উপকারী। এছাড়া ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ পদার্থযুক্ত খাবার প্রতিদিন খেতে হবে।
ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে ফ্যাট দ্রবণীয় ভিটামিন। ত্বকের কোষ মেরামত করে ও কোলাজেন উৎপাদনকে স্থিতিশীল করে ভিটামিন ‘এ’। এছাড়া অন্যান্য ফ্যাট-দ্রবণীয় ভিটামিন সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। খাবারের তালিকায় স্যামন মাছ, অ্যাভোকাডো, আখরোট, ঘি, তিল, অলিভ অয়েল থাকলে বয়সের ছাপ সহজে পড়বে না।
প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখতে হবে পর্যাপ্ত রঙ্গিন শাকসবজি। এতে প্রায় সব ধরনের ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান। এসব খাবার দূষণ ও রোদের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে কাজ করে। তাই নিয়মিত সবুজ শাকসবজি খেলে চেহারায় বয়সের ছাপ সহজে পড়ে না।
ওষুধি গুণে ভরা মসলা দারুচিনি। দারুচিনির রয়েছে আরও অনেক কার্যকারিতা। কারণ এটি পলিফেনল সমৃদ্ধ। ত্বকের জন্য স্বাস্থ্যকর কোষ উৎপাদনকে দ্রুত বাড়িয়ে দেয় এই মসলা। তাই নিয়মিত দারুচিনি খেতে পারেন। এতে ত্বকে বয়সের ছাপ সহজে পড়বে না।
আদা ও মধু দুটোই খুব উপকারী। আদা ত্বকের ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে সাহায্য করে। আদার রস যদি মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খান তবে সেটি বার্ধক্য ঠেকাতে দারুণভাবে কাজ করে। এটি পরিণত হয় প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল দ্রবণে। তাই বলিরেখা রোধ করা সহজ হয়।
মাশরুম খাওয়ার অনেকগুলো উপকারিতার একটি হলো, এটি ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া রোধ করে। কারণ মাশরুমে থাকে প্রচুর কপার। এটি ত্বকে প্রাকৃতিকভাবে উপস্থিত প্রোটিন, কোলাজেন এবং ইলাস্টিনকে সংশ্লেষিত এবং স্থিতিশীল করতে সহায়তা করে। তাই ত্বকে বয়সের ছাপ কমাতে চাইলে মাশরুম খান।
মেনে চলতে হবে যা:
প্রতি রাতে আট ঘণ্টা ঘুম অত্যন্ত জরুরি। কারণ ঘুমানোর সময় ত্বকের রক্তসঞ্চালন বেড়ে যায়, যা ত্বককে বলিরেখার হাত থেকে বাঁচায়। কম ঘুমালে মানসিক চাপ, উদ্বেগ বাড়ে। তা থেকে অচিরেই পড়তে পারে বার্ধক্যের ছাপ।
সুস্থাতায় শরীরচর্চার কোনো বিকল্প নেই। ওজন কমানো থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো— সবক্ষেত্রেই ব্যায়ামের ভূমিকা রয়েছে। পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকরা একটাই পরামর্শ দেন— নিয়ম করে শরীরচর্চা করে যেতে হবে এবং এতে করে বয়সের ছাপ দূরে রাখার পাশাপাশি রোগের ঝুঁকিও কমবে।
শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতা অনেক বেশি প্রয়োজন। মানসিক অবসাদের ছাপ কিন্তু চোখে-মুখে পড়ে। এর ফলে ত্বক অনেকটা বুড়িয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে মনের যত্ন নিতে হবে।
বয়সের ছাপ সবচেয়ে দ্রুত ফেলে রোদ। বাইরে বের হলেই সঙ্গে রাখুন ছাতা, টুপি, কালো চশমা। ফুলহাতা জামা পরুন। অবশ্যই সানস্ক্রিন লোশন মাখতে ভুলবেন না। শুধু রোদ নয় মেঘলা দিনেও সানস্ক্রিন মাখবেন।
মন্তব্য করুন