আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিবে তৃণমূল বিএনপি। এমন কথা জানিয়ে দলটির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী বলেছেন, মনোনয়ন ফরম বিক্রি হবে ১৮ নভেম্বর থেকে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীতে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
তফসিলকে স্বাগত ও নির্বাচন কমিশনকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আসন্ন জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা সংবিধান অনুযায়ী করা হয়েছে। তৃণমূল বিএনপি নির্বাচনমুখী দল, নির্বাচনে যাবে তৃণমূল বিএনপি। দল আশা করছে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে।
ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগে দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করবেন সংশ্লিষ্টরা-এ অভিমত ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ৩০০ আসনে প্রার্থী দিবে তৃণমূল বিএনপি। আগামী ১৮ নভেম্বর থেকে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করা হবে। মনোনয়ন ফরম ফি ধরা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। ২১, ২২ ও ২৪ তারিখ সাক্ষাৎকার নেয়া ও প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হবে।
ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন এমন প্রত্যাশা করে তিনি আরও বলেন, নির্বাচন বর্জনের মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে দলগুলোকে। বিএনপি থেকে কেউ আসতে চাইলে তৃণমূল বিএনপির দ্বার উন্মুক্ত। যোগ্য হলে মনোনয়ন দেয়া হবে। তৃণমূল বিএনপি জনগণের অংশগ্রহণে বিশ্বাসী।
এর আগেও ১২ নভেম্বর সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর দক্ষিণভাগ গ্রামে নিজ বাড়িতে বিয়ানীবাজার মৎস্যজীবী সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে তৃণমূল বিএনপি প্রার্থী দেয়ার কথা জানান।
এ সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে ৩০০টি সংসদীয় আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচন করবেন ভোটাররা। এবার সারা দেশে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসকেরা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৭ জানুয়ারি (রোববার)। বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী-
মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে আগামী ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। রিটার্নিং অফিসারের আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি হবে ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত।
এর আগে বিকেল ৫টায় বর্তমান কমিশনের ২৬তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় তফসিল চূড়ান্ত করা হয়।
সংবিধান অনুযায়ী, ১ নভেম্বর থেকেই শুরু হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের ক্ষণগণনা। ডেডলাইন ২৯ জানুয়ারি। অর্থাৎ জানুয়ারির শুরু থেকে যেকোনো সময় তফসিল দিতে পারবে কমিশন। চলতি সংসদের ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগের ৯০ দিন অর্থাৎ ২৯ জানুয়ারির মধ্যেই ভোট হতে হবে।
ভোটের প্রস্তুতিতে আগেই রোডম্যাপ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই অনুসারে ভোটার তালিকা হাল নাগাদ, সীমানা পুনঃনির্ধারণ, অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ, ব্যালট বাদে ভোটের বাকি সরঞ্জাম জেলায় জেলায় পৌঁছে দেয়াসহ সব কাজ সেরেছে নির্ধারিত সময়েই। রেওয়াজ অনুযায়ী ৯ নভেম্বর বঙ্গভবনে ভোটের সবশেষ প্রস্তুতি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করে কমিশন।
গত ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর দেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে দশম সংসদ ভোট হয় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি। তার আগে নবম সংসদ নির্বাচনের তারিখ ছিল ২৯ ডিসেম্বর। অর্থাৎ সবশেষ জাতীয় নির্বাচনগুলো ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির শুরুতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
মন্তব্য করুন